পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশের রেকর্ডপত্র অনুযায়ি এখন পযর্ন্ত কোন রোহিঙ্গা তাদের নিজ দেশে ফিরে যায়নি। কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় রাখাইনে ফিরে গেছে বলে মিয়ানমারের দাবি সত্য নয় বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন আজ তার দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, তারা সর্বত্র অসত্য বলছেন। আমাদের রেকর্ডপত্র অনুযায়ি এখন পযর্ন্ত একজন রোহিঙ্গাও রাখাইনে ফিরে যায়নি।
মিয়ানমার দূতাবাস তাদের ফেসবুক পোস্টে বাংলাদেশ থেকে আজ ৪৬ জন রোহিঙ্গা তাউং পেও লেটওয়ে এবং নগা খু ইয়া অর্ভ্যথনা কেন্দ্র দিয়ে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার দাবি করছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে অনুকুল কোন পরিবেশ না থাকায় সেদেশের নাগরিক হিসাবে দেশটির কর্তৃপক্ষের যাচাইকৃত কোন রোহিঙ্গা এখন পযর্ন্ত তাদের দেশে ফিরে যায়নি।
মন্ত্রী বলেন, স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার মিয়ানমারের দাবি যাচাই করে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিবে। কক্সবাজারে ইউএনএইচসিআর এবং আরআরআরসি কর্মকর্তারা রোহিঙ্গাদের এ ধরনের প্রত্যাবাসন সম্পর্কে কিছু জানে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের রাখাইনে নিরাপদ, মর্যাদা এবং স্বেচ্ছায় ফিরে যাবার অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টির দাবি যাচাই করে দেখতে আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যম, এবং জাতিসংঘ সংস্থা ও নন মিলিট্যান্ট সিভিলিয়ানদের আহবান জানাতে কয়েকবার মিয়ানমারকে প্রস্তাব দিয়েছে। অথচ তারা আমাদের প্রস্তাবে কোন সাড়া দেয়নি।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোন সুনিদিষ্ট তারিখ সম্পর্কে কিছু বলতে না পারলেও তিনি বলেন, আমি খুবই খুশি, রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যাচ্ছে। ১৫ নভেম্বর থেকে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর প্রত্রিয়া শুরু হচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার কাছে এ ব্যাপরে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই। তিনি ইউরোপ সফর শেষে সবেমাত্র গতকাল দেশে ফিরে এসেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার দপ্তরে পৃথক এক ব্রিফিংয়ে ভাসানচরে স্থানান্তর সম্পর্কে বলেন ‘এটা ভাল’।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ, মিথ্যা বর্ণনা এবং প্রকৃত ঘটনার অপব্যাখ্যা না দেয়ার জন্য দেশটির প্রতি আহবান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বানোয়াট এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করার মিয়ানমার সরকারের অপচেষ্টার অংশ হিসাবে ঢাকা এই অপপ্রচার প্রত্যক্ষ করছে। বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপদ ও মযার্দার সাথে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে মিয়ানমার প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ঢাকার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ করছে। মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক কেন্দ্রিয় মন্ত্রী ইউ কাও টিন সম্প্রতি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা সংকটকে ধর্মীয় অনুভূতি, দেশের বাইরে জাতিগত গোষ্ঠি, জাতিগত নিধন অথবা গনহত্যা হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করার অভিযোগ করার পর গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় থেকে এ বিবৃতি দেয়া হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দালিলিক তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে বিষয়টি বিবেচনা করছে।