চিলিতে বুধবার বিক্ষোভকারীরা সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেয়ায় দেশটির হাজার হাজার নাগরিক সান্তিয়াগো এবং অন্যান্য নগরীর রাজপথে মেনে আসে। কয়েকদিনের সামাজিক অস্থিরতায় ১৮ জন নিহত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরার ওপর চাপ আরো জোরদারে এ ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়।
সহিংসতাপূর্ণ পরিস্থিতি শান্ত করার লক্ষ্যে পিনেরা ঘোষিত গুচ্ছ পদক্ষেপ উপেক্ষা করে দেশের বৃহত্তম ইউনিয়নের আহ্বানে সাড়া দিয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করে এবং সরকারি কর্মচারীরা কাজে যোগ দেয়া থেকে বিরত থাকে।
ওয়ার্কার্স ইউনাইটেড সেন্টার অব চিলি জানায়, ‘ধর্মঘট চলছে! আমরা উচ্চ কণ্ঠে স্পষ্ট করে বলতে চাই যে নিহতের সংখ্যা ও দমনপীড়ন অনেক হয়েছে। এটা আর চলতে দেয়া যায় না।’ ফলে তারা অন্যান্যা প্রায় ২০টি গ্রুপের পাশাপাশি দু’দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
এদিকে রাজধানী সান্তিয়াগোতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জল কামান ব্যবহার করে।
চিলির সামাজিক ও অর্থনৈতিক দুর্দশা এবং ধনী ও গরীবের মধ্যে স্পষ্ট ব্যবধানের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে শুরু হওয়া বিক্ষোভের পর থেকেই জনপ্রিয় একটি শ্লোগান হচ্ছে ‘চিলির জনগণ জেগেছে’।
ল্যাটিন আমেরিকার অন্যতম স্থিতিশীল দেশ চিলিতে বিগত কয়েক দশকের মধ্যে এতো ব্যাপক সহিংসতা হতে দেখা যায়নি। মেট্রো ট্রেনের টিকিটের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে শুক্রবার নাটকীয়ভাবে এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ইন্টেরিওর আন্ডারসেক্রেটারি রোদ্রিগো উবিলা জানান, মাতাল এক চালক মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের ভিড়ের মধ্যে দ্রুত বেগে গাড়ি চালিয়ে দেয়ায় চার বছর বয়সের এক শিশু ও এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, পুলিশের নির্যাতনের পর তৃতীয় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে সশস্ত্র বাহিনী ঘোষিত সান্ধ্যকালীন কারফিউ পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে সামাজিক অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি পূর্বানুমান করতে না পারার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।
চিলির কিছু বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে বৈঠকের পর পিনেরা বলেন, ‘আমি মেনে নিচ্ছি যে এক্ষেত্রে আমার দূরদর্শীতার ঘাটতি ছিল।’
মানবাধিকার বিষয়ক জাতীয় সংস্থা জানায়, চিলির সহিংসতায় ১৮ জন নিহত ও ২৬৯ জন আহত হয়েছে। এছাড়া প্রায় এক হাজার ৯শ’ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।