তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ঐক্যফ্রন্টকে রাজনীতির মাঠে বিগত যৌবনা হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, তাদের কথা মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না। ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাজনীতির মাঠে ওনারা (ঐক্যফ্রন্ট) এখন বিগত যৌবনা। এখন তাদের ডাকে কেউ সাড়া দিচ্ছে না। রাজনীতিতে তাদের যে যশ প্রতিপত্তি ছিল সেটি হারিয়ে গেছে। তারা এখন যে কথাগুলো বলছেন, সেগুলো মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না।’ তথ্যমন্ত্রী আজ দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর জেএম সেন হল মাঠে তাঁতী লীগ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তবে এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম মহানগর তাঁতী লীগের আহবায়ক নুরুল আমিন মানিকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ফেনী সদর আসনের সংসদসদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তাঁতী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো. শওকত আলী সন্মেলনের উদ্বোধন করেন। প্রধান বক্তা ছিলেন তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক খগেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ ও কার্যকরী সভাপতি সাধনা দাশ গুপ্ত।
মাঠে নামার জন্য ঐক্যফ্রন্টকে স্বাগত জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করা হচ্ছে, তারা মাঠে নেমেছে। গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য আমাদের শক্তিশালী বিরোধীদল প্রয়োজন। কিন্তু সভা-সমাবেশে গিয়ে তারা ইস্যু খুঁজে পাচ্ছেন না। সেই জন্য খড়খুঁটো ধরে ইস্যু তৈরি করার চেষ্টা করছেন।’
‘তারা কতক্ষণ কোটা আন্দোলন নিয়ে, কখনো নিরাপদ সড়কের আন্দোলনকে ঘিরে, কখনো আবরার হত্যাকান্ডকে ইস্যু করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এসব চেষ্টার কোনটাই হালে পানি পাচ্ছে না,’ বলেন হাছান মাহমুদ।
ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, ‘অবশ্যই আপনারা সরকারের সমালোচনা করবেন। আমরা সমালোচনাকে সমাদৃত করার সংস্কৃতি লালন করি। শক্তিশালী বিরোধী দল সংসদে ও রাজপথে আমাদের বস্তুনিষ্ঠ সমালোচনা করুক আমরা সেটা চাই। এই সমালোচনা যাতে আমাদের পথচলাকে শাণিত করে।’ কিন্তু তারা যে অহেতুক সমালোচনা করে, সেটা রাজনীতি দেশ ও মানুষের জন্য শুভ নয় বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী ।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগের আগামী সম্মেলনকে সামনে রেখে দলকে পরিষ্কার করার কাজে হাত দেয়া হয়েছে। ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো থেকেও আগাছা-পরগাছাদের দুর করতে হবে। কিছু কিছু আছে শুধু ফেইসবুকে রাজনীতি করেন, ছবি একটা তুলবে সেটা পোস্ট দিবে। এদের জন্যও অতিষ্ট উল্লেখ করে তিনি এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পরপর তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে দলে অনেক আগাছা-পরগাছা ঢুকেছে। অনেকে নানাভাবে পদ পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাদের সমস্ত পর্যায় থেকে দুর করতে হবে। বিরোধীদলে থাকার সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যারা নির্যাতন করেছে, তারা যেন কোনভাবেই দলে প্রবেশ করতে না পারে।
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ’দলের নেতা-কর্মীদের ভাইয়ের রাজনীতি না করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ ধরনের রাজনীতি দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া সম্ভব নয়। বঙ্গবন্ধুর কর্মী হতে হলে তার আদর্শ ও দর্শনকে ধারণ করতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের রাজনীতি করে। আমরা যদি সাধারণ মানুষের চাইতে অতিমাত্রায় সমৃদ্ধশালী হয়ে যাই, অনিয়ম ও অপরাজনীতির মাধ্যমে বিশাল সম্পদের অধিকারী হই তাহলে কিন্তু আমাদের এই দলের প্রতিনিধিত্ব করবার রাজনৈতিক যোগ্যতা কিংবা নৈতিকতা কেনোটাই থাকবে না।
আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, দলে কোন অপরাধী, মাদকাসক্ত, জুয়াড়ি কিংবা ক্যাসিনো ব্যবসায়ীর জায়গা যাতে না হয়। শুধু আওয়ামী লীগ নয় দলের যত অঙ্গ সংগঠন আছে প্রত্যেক সংগঠনেই এই ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী মাদক, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। সেটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।